🇺🇸 ট্রাম্পের দাবি: ইসরায়েল–ইরানে ‘পূর্ণ যুদ্ধবিরতি’, কিন্তু দুই পক্ষই নিশ্চিত করেনি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে “সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত” যুদ্ধবিরতি হয়েছে। এটি ঘটবে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। তবে দুই পক্ষই এখনো এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি।

ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছেন, “এটি ছিল এমন এক যুদ্ধ, যা বছরের পর বছর ধরে চলতে পারত এবং গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারত। কিন্তু এখন আর তা হবে না। ঈশ্বর ইসরায়েলকে আশীর্বাদ করুন, ইরানকে আশীর্বাদ করুন, মধ্যপ্রাচ্যকে আশীর্বাদ করুন, আমেরিকাকে আশীর্বাদ করুন এবং ঈশ্বর পৃথিবীকে আশীর্বাদ করুন!”

🔥 পটভূমি

ট্রাম্পের এ ঘোষণা আসে ইরানের কাতারস্থিত আল উদাইদ এয়ার বেসে মিসাইল আঘাতের কিছুক্ষণ পরে। এ বেসে মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রয়েছে।

“আমি ইসরায়েল ও ইরানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যে সাহস ও বুদ্ধি দিয়ে তারা এই ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ করেছে,” লিখেছেন ট্রাম্প।

🌍 ইরান ও ইসরায়েল কী বলছে?

ইসরায়েল বা ইরান কেউই ট্রাম্পের ঘোষণার পর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তেহরানের আল জাজিরা প্রতিবেদক তোহিদ আসাদি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের ঘোষণার পরও রাজধানীতে মিসাইল আটকের শব্দ শোনা গেছে।

“এখনো ইসরায়েলের আঘাত চলছে এবং ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়াও হচ্ছে। তাই ভূমিকা অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি হয়েছে বলা এখন যাচ্ছে না,” জানিয়েছেন তিনি।

⚔️ মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ওমর রহমান বলেছেন, ট্রাম্পের ঘোষণায় অনেক তথ্যই অনুপস্থিত। কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে কিনা বা কূটনৈতিক পথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে কিনা – তা স্পষ্ট নয়।

তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প আগেও ইসরায়েলের পক্ষে কথা বলেছিলেন। যুদ্ধ শুরুর আগেও তিনি কূটনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন পরেই ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে হামলা চালিয়েছিলেন।”

🧨 যুদ্ধের শেষের পথে?

গতকাল শনিবার ট্রাম্প ইরানের তিনটি পারমাণবিক সুবিধায় হামলা করেন। তার আগে ইসরায়েল জুনের ১৩ তারিখে ইরানে বৃহৎ হামলা চালায়। সেখানে ইরানের অনেক জেনারেল নিহত হন।

ইরান এ হামলাকে “অযথা আক্রমণ” বলে অভিহিত করেছে এবং পাল্টা শতাধিক মিসাইল ছুঁড়ে ইসরায়েলে বিধ্বংসী ক্ষতি করেছে।

🧠 বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

আল জাজিরা মিডিয়া ইনস্টিটিউটের পণ্ডিত লিকা মাকি জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কিন্তু ইরানের কাছে এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃত ইউরেনিয়াম ও পারমাণবিক প্রযুক্তি রয়েছে।

“দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ইরান যদি পরীক্ষা না করা হয়, তাহলে বোমা তৈরি করতে পারে বিশ্বের চোখে ধুলো দিয়ে,” জানিয়েছেন তিনি।

🌐 মার্কিন পদক্ষেপ

ট্রাম্প ইরানের আঘাতকে “দুর্বল” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী কোনো পাল্টা পদক্ষেপ নেবে না।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতি ছাড়া এ ধরনের আঘাত সহ্য করতে পারলেও ভবিষ্যতে আরও বড় হামলা হতে পারে।