বাংলাদেশে প্রায় ৩৫ লাখ শিশু শ্রমিক এবং ১০ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছেন শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, শিশুশ্রম দমনে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যার মধ্যে অপরাধীদের শাস্তি বাড়ানো এবং শিশুশ্রমের সংজ্ঞা পরিবর্তন অন্যতম।
আইন সংস্কারের কারণ :
বর্তমান শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজে নিয়োগ করা হলে তা শিশুশ্রম হিসেবে গণ্য হয়। তবে শ্রম উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, “বর্তমান সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে শিশু শ্রমিকদের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হবে।”
সরকারি পদক্ষেপ :
শ্রম উপদেষ্টা ঘোষণা করেন, “যারা শিশুদের কাজে নিয়োগ করেন, তাদের শাস্তি কয়েকগুণ বাড়ানো হবে। জোর করে কোনো শিশুকে কাজে পাঠানো যাবে না। এটা দণ্ডনীয় অপরাধ।” তিনি আরও বলেন, কয়েক মাসের মধ্যেই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া :
সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে অংশ নিয়ে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক মহলকে বলেছি, শিশুশ্রমের সংজ্ঞা পরিবর্তন করুন। বাংলাদেশে কিছু শিশু পারিবারিক কাজে সহায়তা করে, কিন্তু স্কুলেও যায়। এটিকে কীভাবে শিশুশ্রম হিসেবে গণ্য করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।”
পরিসংখ্যান ও চ্যালেঞ্জ :
ইউনিসেফ ও আইএলও যৌথ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে ১০.৭ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ছিল। যদিও এই হার ২০১৩ সালের তুলনায় কিছুটা কমেছে, তবু শিশুশ্রমের সামগ্রিক হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা :
১৯ জুনে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য: “স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশুশ্রমের শৃঙ্খল ছিঁড়ি—এগিয়ে চলি দৃপ্ত পায়ে, আশার আগুন বুকে জ্বালি।”